ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আজ শুভ মহালয়া

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৯:৩৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আজ শুভ মহালয়া

ছবি: ইউএনবি

আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শুভ মহালয়া। এই দিনের মাধ্যমে শুরু হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই বিশেষ দিনে ধ্বনিত হয় দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনের বার্তা, যা অশুভের বিরুদ্ধে শুভের চিরন্তন জয়ের প্রতীক।

শরতের শুভ্র এই সকালে চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়েই সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের। ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে চলছে চণ্ডীপাঠ, তর্পণ এবং দেবী দুর্গার বন্দনা, রিপোর্ট ইউএনবি’র।

মহালয়া শুধু পূজার একটি আনুষ্ঠানিক সূচনাই নয়, এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি আধ্যাত্মিক উপলক্ষও। এই দিন থেকেই দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনা শুরু হয়। ষষ্ঠীপূজা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর, আর ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে দেবী মর্ত্যলোকে ত্যাগ করে আবার কৈলাসে ফিরে যাবেন।

পুরাণ মতে, দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব—‘মহালয়া’, ‘বোধন’ আর ‘সন্ধিপূজা’। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বরে কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়।

তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব—ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন। একেক দেবতা দিলেন অস্ত্র। দেবতাদের দেওয়া দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করেন।
মহালয়ার ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ। সনাতন ধর্মে বলা হয়, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। এ সময় মৃত আত্মীয়-পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে জল-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়।

ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের নানা জায়গায় মন্দিরে ভিড় করেন ভক্তরা। ঢাক-উলুধ্বনি আর চণ্ডীপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পরিবেশ। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মন্দিরে আসেন দেবীকে আহ্বান জানাতে। ভক্তরা জানান, মায়ের আগমনের আনন্দ তাদের হৃদয় জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই প্রত্যাশা করছেন, এবারের পূজা হোক নির্বিঘ্ন ও শান্তিময়।

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে চণ্ডীপাঠ, চণ্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হবে।

এছাড়াও সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন