ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০:৫৬, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৫৩, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে লাগা আগুন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ছবি: বাসস।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে লাগা আগুন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কার্যালয়ের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে এবং বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে আগুন লাগার পর থেকে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, রিপোর্ট বাসসের। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি অগ্নিনির্বাপণ ইউনিট, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছেন। পাশাপাশি উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
চারটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট—ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের দুটি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুটি—চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে মোট আটটি বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। নিরাপত্তা শঙ্কায় কয়েকটি ঢাকাগামী ফ্লাইট চট্টগ্রাম ও কলকাতায় অবতরণ করেছে। ট্যাক্সিওয়েতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও থেমে আছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কার্গো সেকশনের আমদানি বিভাগে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়।
আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ইউনিটগুলো যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি টিমগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত এক অডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমরা একটি জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি; দয়া করে আমাদের সহযোগিতা করুন। যথাসময়ে সঠিক তথ্য আপনাদের জানানো হবে।”
কর্মকর্তারা জানান, আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় কাছাকাছি থাকা বিমানগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর নিরাপত্তা মূল্যায়ন শেষে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে।
ইউএনবি যোগ করেছে :
জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের কারণে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরগামী বাটিক এয়ারের ওডি–১৬৩ ফ্লাইট এবং ঢাকা থেকে মুম্বাইগামী ইন্ডিগোর ৬ই–১১১৬ ফ্লাইট ট্যাক্সিওয়েতে অপেক্ষা করছে।
ব্যাংকক থেকে ঢাকায় আসা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি অবতরণ করেছে চট্টগ্রামে৷ দিল্লি থেকে ঢাকা আসা ইন্ডিগো ফ্লাইট অবতরণ করেছে কলকাতায়। এয়ার এরাবিয়ার শারহাজ থেকে ঢাকা আসা চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। হংকং থেকে ঢাকা আসা ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনসের বিমানটি অবতরণ না করতে পেরে আকাশে ঘুরছে৷
এ ছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ না করে চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে।
একইভাবে ইউএস–বাংলা এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের পর পুনরায় চট্টগ্রামে ফিরে গেছে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, আগুন লেগেছে মূল কার্গো এলাকার পাশে থাকা একটি অংশে, যেখানে আমদানি করা পণ্য মজুদ রাখা হয়।