নিজস্ব প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০:০৪, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
বিজিএমইএ ভবন উত্তরা, ঢাকা। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে ‘বাংলাদেশ শ্রম সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫’ পুনর্বিবেচনা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা উন্নয়ন ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন ৩ বছর পিছিয়ে দেয়ার জন্য জোরালো আহবান জানিয়েছে বিজিএমইএ।
পোশাক শিল্পসহ দেশের সমগ্র উৎপাদনমুখী শিল্পখাত বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই গুরুতর প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদিত 'বাংলাদেশ শ্রম সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫' এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতার ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে এমন জরুরি ইস্যু, যেমন এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর অফিস সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান (বাবলু), সহ-সভাপতি মোঃ রেজোয়ান সেলিম, সহ-সভাপতি (অর্থ)মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, বিজিএমইএ এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগন এবং বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যানগন।
বিভিন্ন বানিজ্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এর সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ); বিকেএমইএ এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম; বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএপিএমইএ) এর সভাপতি মো. শাহরিয়ার, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এর সভাপতি তাসকীন আহমেদ, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি (বাপি) এর সিইও মেজর জেনারেল (অবঃ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য প্রদান করেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
বিজিএমইএ সভাপতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে, সদ্য অনুমোদিত 'বাংলাদেশ শ্রম সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫'-এর কতিপয় বিধান, বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, দ্বৈত পেনশন স্কিম এবং শ্রমিক সজ্ঞায়িত করার মতো বিষয়গুলো, দেশের বাস্তবতা ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই ধারাগুলো কার্যকর হলে শিল্পে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি শিল্পের চলমান চ্যালেঞ্জ এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে দেশের বাস্তবতা ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে 'বাংলাদেশ শ্রম সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫' পুনর্বিবেচনা করা জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন বানিজ্য সংগঠনের নেতারা বলেন যে বন্দরের সেবার বিপরীতে প্রায় ৪১% মাশুল বৃদ্ধি শিল্পের পরিচালন ব্যয় বাড়িয়ে দিবে। তারা বলেন এই মাশুল বৃদ্ধি অযৌক্তিক, কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে গত ৪০ বছরে টাকার অংকে মাশুল ইতোমধ্যেই ৩০৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা বন্দরের মাশুল না বাড়িয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
সভায় পোশাক শিল্পসহ দেশের সমগ্র উৎপাদনমুখী শিল্পখাতের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এলডিসি উত্তোরণের সময়সীমা অন্তত ৩ বছর পিছিয়ে দেয়ার জন্য জোর আহবান জানানো হয়।