ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭:০৬, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
মঙ্গলবার সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে একটি দল সাক্ষাৎ করে। ছবি: বাসস।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আগামী নভেম্বরে গণভোটের আয়োজন করাসহ ১৮ দফা সুপারিশ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে এই দাবি জানান, রিপোর্ট বাসসের।
বৈঠকে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসময় চারজন নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য সিইসির কাছে ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করেছি। আমাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে তারা ক্লারিফিকেশন দিয়েছেন। কি কি পদক্ষেপ তারা নিচ্ছেন। তাদের সামনে কি কি চ্যালেঞ্জ আছে। কি কি টেকনিক্যাল অসুবিধা আছে। আর কি কি সম্ভাবনা আছে। সেগুলো তুলে ধরেছেনে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার কথা বলেছেন। আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব ধরণের সহযোগিতা দিব। কিন্তু নির্বাচনটা সুষ্ঠু করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ১৮টা দফায় বলেছি গণভোটকে জাতীয় নির্বাচনের আগে করতে হবে এবং আগামী নভেম্বরেই এই গণভোট সম্পন্ন করতে হবে। নভেম্বরই উপযুক্ত সময়। একই দিনে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হলে নির্বাচন কেন্দ্রে যদি সংঘর্ষ হয়, দু’চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হতে পারে। তাহলে গণভোটের দশাটা কি হবে। আমরা রেফারেন্স দিয়েছি ১৭ দিন এবং ২১দিনও আমাদের গণভোটের রেফারেন্স আছে।’
তিনি আগামী নির্বাচনটা নিরপেক্ষ করতে ব্যক্তি ও দলের উর্ধ্বে উঠে দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষায় সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াতে ইসলামীর ১৮ দফা সুপারিশের অন্যান্য দফায় বলা হয়েছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটগতভাবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনই সুপারিশ করেছে। ফলে এই বিধান কোনো ক্রমেই পরিবর্তন করা যাবে না। সংশোধিত বিধানই বহাল রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনী কাজের জন্য নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথা প্রিজাইডিং, পোলিং, আনসার, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করতে হবে। নির্বাচনী বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল এমন সব প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া যাবে না। শতভাগ লটারির ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি) নিয়োগ দিতে হবে।
রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসনের অফিসারগণের সঙ্গে সাধ্যমত ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকেও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্বে সামরিক বাহিনী, বিজিবি, র্যাাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করে নির্বাচনী মাঠ সমতল করতে হবে।