ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ঢাকায় সবজির দাম এখনো বেশি, ক্রেতারা বাধ্য হয়ে কম কিনছেন

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৫:২০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকায় সবজির দাম এখনো বেশি, ক্রেতারা বাধ্য হয়ে কম কিনছেন

ফাইল ছবি।

 

মাসের শুরু থেকেই ঢাকার বাজারগুলোতে সবজির দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, যার ফলে ক্রেতারা এক কেজির পরিবর্তে ২৫০-৫০০ গ্রাম করে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, এই আকাশছোঁয়া দাম তাদের দৈনন্দিন খরচকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, রিপোর্ট ইউএনবি’র। 

শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম—প্রতি কেজি ২০০ টাকা, আর ভালো মানের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। টমেটো ও গাজরের দামও প্রতি কেজি ১৫০ টাকার বেশি।

উত্তর বাড্ডা বাজারের ক্রেতা সুমনা আক্তার রুবি বলেন, “একটি গোল বেগুনের ওজন ২৫০ গ্রামের বেশি। তার মানে, এক পিস বেগুন কিনতেই ৪০-৫০ টাকা লাগে। আমরা দুটি বেগুনের বেশি কেনার কথা ভাবতেও পারি না।”

আরেক ক্রেতা মনসুর আহমেদ বলেন, “এক পোয়া শিমের দাম ৫০ টাকা। টমেটোর দামও প্রায় একই। ৫০০ টাকায় চারজনের একটি পরিবারের জন্য সবজি দুই দিনও চলে না।”

ঈদের আগে মুরগি, গরুর মাংস, দুধ, শসা ও সবজির দাম বেড়েছে।

অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি ১২০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আর ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঢেঁড়স ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিটি ১০০-১২০ টাকা এবং জালি কুমড়া প্রতিটি ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, আগে তারা আধা কেজির নিচে সবজি বিক্রি করতেন না, কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় এখন ২৫০ গ্রামের প্যাকেট বিক্রি করছেন।

মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজারের সবজি বিক্রেতা আসাদুল বলেন, “পাইকারি বাজারে দাম এখনো অনেক বেশি এবং সরবরাহও কম, তাই আমরা বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছি। বিক্রিও এখন কমে গেছে।”
অন্যান্য সবজির মতোই শাক-সবজির দামও বেড়েছে। মাত্র এক মাস আগেও পালং শাক, কলমি শাক এবং ডাঁটা শাক প্রতি আঁটি ১০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২০ টাকা। লাউ শাক, কুমড়া শাক এবং পুঁই শাক প্রতি আঁটি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। যদিও খুচরা বাজারে এই দাম কমার প্রভাব এখনো দেখা যায়নি।

ছোট মাছের দামও বেড়েছে। কাচকি মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৮০০ টাকায়, নদীর চিংড়ি ১,০০০-১,২০০ টাকায়, দেশি কই ৮০০-১,০০০ টাকায়, পুঁটি ৬৫০-৭৫০ টাকায় এবং গুচি মাছ ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রচুর ইলিশের সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও, বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে এর দাম। বড় ইলিশ ২,২০০-২,৫০০ টাকা কেজি, মাঝারি আকারের ১,৮০০-২,০০০ টাকা এবং ছোট ইলিশ ১,২০০-১,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে—সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০-৩২০ টাকায়, ব্রয়লার ১৭০ টাকায় এবং স্থানভেদে দেশি মুরগি ৫০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি দরে এবং খাসির মাংস ১,০০০-১,২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, যদি সবজির দাম না কমে, তাহলে সংসার চালানো ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়বে, কারণ তাদের মাসিক আয়ের একটি বড় অংশই এখন নিত্যপণ্যের পেছনে চলে যাচ্ছে।
 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন