ঢাকা, রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

১০ কার্তিক ১৪৩২, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন

এলডিসি উত্তরণে বিশেষ সহায়তায় আঙ্কটাডকে ম্যান্ডেট প্রদান

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১:১২, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

এলডিসি উত্তরণে বিশেষ সহায়তায় আঙ্কটাডকে ম্যান্ডেট প্রদান

ছবি: বাসস।

জেনেভায় সম্প্রতি গৃহীত ‘জেনেভা কনসেন্সাস’-এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের ১৬তম মন্ত্রী পর্যায়ের শীর্ষ অধিবেশন (ইউএনসিটিএডি-১৬) শেষ হয়েছে। 

জেনেভায় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি আয়োজন করে সুইজারল্যান্ড সরকার এবং আঙ্কটাড। সম্মেলনে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীবৃন্দ, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ, নীতি বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং তরুণ নেতৃবৃন্দ।

১৯৬৪ সাল থেকে প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত আঙ্কটাড সম্মেলন সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী অধিবেশন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ভবিষ্যৎ নির্মাণ : ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক রূপান্তর’। 

মূল সম্মেলনে বিগত ১১ মাসব্যাপী নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত ‘জেনেভা কনসেন্সাস’- শীর্ষক আউটকাম ডকুমেন্ট গৃহীত হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টে আগামী চার বছরের জন্য আঙ্কটাডের কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। 

সম্মেলনের বিভিন্ন আলোচনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে। এছাড়া, বাংলাদেশ উন্নয়ন অর্থায়নের ঘাটতি, ঋণের চাপ এবং এলডিসি ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের ওপর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের বহুমাত্রিক প্রভাব মোকাবিলায় শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানায়।

জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে, জেনেভা কনসেন্সাসে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে এলডিসি দেশগুলোর জন্য বিশেষ আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিতের দাবি অন্তর্ভুক্ত হয়। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর দেশগুলোর স্মুথ ট্রানজিশন তথা মসৃণ উত্তরণ নিশ্চিত করতে বিশেষ সহায়তা ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। 

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ‘জেনেভা কনসেন্সাস’— শীর্ষক আউটকাম ডকুমেন্টে আঙ্কটাডকে একটি বিশেষ ‘গ্রাজুয়েটিং সাপোর্ট প্রোগ্রাম’ প্রণয়নের ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে— যা বাংলাদেশসহ গ্রাজুয়েশনের পথে থাকা অন্যান্য এলডিসি দেশগুলোর জন্য বড় ধরনের সাফল্য।

এছাড়া, প্রযুক্তি হস্তান্তর, এলডিসি দেশগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ প্রবাহ নিশ্চিতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাসের বিষয়ের মতো আলোচনায় স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহের অবস্থান এবং ন্যায্য দাবি জেনেভা কনসেন্সাসে প্রতিফলিত করতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পক্ষ হতে জেনেভা কনসেন্সাস গৃহীত হওয়া নেগোসিয়েশনে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশে স্থায়ী মিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) আবদুল্লাহ বিন মাহবুব, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) মাসুদ পারভেজ এবং কাউন্সেলর (বাণিজ্য) সেলিম হোসেন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। বাণিজ্য সচিব সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদান ছাড়াও বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রিসভা, গোলটেবিল বৈঠক ও নীতি সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। 

পাশাপাশি, তিনি আঙ্কটাড মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান এবং জাতিসংঘের এলডিসি বিষয়ক দপ্তর (ওএইচআরএলএলএস)-এর উচ্চ প্রতিনিধি ও আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল মিস রাবাব ফাতিমার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন