ঢাকা, রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

১০ কার্তিক ১৪৩২, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

বললেন চিফ প্রসিকিউটর

চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা তুলে আনতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯:০০, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা তুলে আনতে হবে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: বাসস।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা গণমাধ্যমে তুলে আনতে হবে। নতুন প্রজন্মের ভাষা, আকুতি তুলে ধরতে হবে।

দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতায় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, রিপোর্ট বাসসের। 

দেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তারা নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানান।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্টে প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা, শহীদের পরিবারের সাথে কথা বলে এক গৌরব উজ্জ্বল বীরত্বগাথা দেখতে পাবেন। আমরা যদি তাদের তুলে আনতে না পারি, তাহলে এই জেনারেশনের কথা কিন্তু আমরা বুঝতে পারব না। আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়া, আগামীর বাংলাদেশে প্রাসঙ্গিক থাকার কোনো অধিকার আমাদের থাকবে না।

তিনি বলেন, যে মহাবিপ্লব হয়েছে জুলাই এবং আগস্টে, ভেতর থেকে কী পরিবর্তন হয়েছে, সে উপলব্ধি আমাদের করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে, শহরের দেয়ালে যে গ্রাফিতি, তাদের ভাষা, তাদের প্রেজেন্টেশন, তাদের মনের আকুতি আমাদের বুঝতে হবে। সে আলোকে ন্যারেটিভ তৈরি করতে হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পত্রিকাগুলো শেখ হাসিনার শাসনের ভয়াবহ পরিস্থিতি পুরোপুরি তুলে আনতে পারেনি। এখনো সেসব তুলে আনার সময় আছে। প্রত্যেকটি গুমের ঘটনা তুলে আনতে হবে। জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা তুলে আনতে হবে। নতুন প্রজন্মের ভাষা, আকুতি তুলে আনতে হবে।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জেনজিকে আমরা অপদার্থ ভেবেছিলাম। বলতাম, এগুলো পাবজি খেলে, এগুলো ফেসবুকে পড়ে থাকে, ফার্মের মুরগির মতো। কিন্তু আবাবিল পাখির মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথর আর লাঠি দিয়ে এক স্বৈরশাসককে শুধু চর্বিত ঘাসের ন্যায় পিষেই ফেলেননি, দিল্লি পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘এটা এক মহাকাব্যিক বিপ্লব। এটা জাতির প্রবহমান রক্তস্রোতের সাথে আমাদের মিশিয়ে দিতে হবে, যে এমন বিপ্লব আমাদের সন্তানরা করতে পারে। তাদের বীরত্বগাথা লিখে রাখতে হবে, সংরক্ষণ করতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য। যাতে কোনোদিন প্রয়োজন হলে আমাদের সন্তানরা আবার একইভাবে জেগে উঠতে পারে।’

চিফ প্রসিকিউটর নয়া দিগন্ত পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আপনাদের দায়িত্বের কথাটি আরেকবার মনে করিয়ে দিয়ে মুক্ত বাংলাদেশে আবার আমরা সমৃদ্ধির সেই পর্যায়ে দেশকে নিয়ে যাবো, মুক্ত বাতাসে আমরা বুকভরে শ্বাস নেবো। বাংলাদেশ এমন পর্যায়ে যাবে, যেদিন আমাদের মানুষেরা উচ্চশিক্ষার জন্য, ব্যবসার জন্য ইউরোপ বা আমেরিকায় যাবেন না।

তিনি বলেন, ইংরেজরা যেমন বাংলাদেশে এসেছে ব্যবসা শেখার প্রয়োজনে, সভ্যতা শেখার প্রয়োজনে এই বাংলা, সোনার বাংলা আবার সেই পর্যায়ে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে।

আমেরিকা, ইউরোপিয়ান, চাইনিজরা শিক্ষার জন্য, ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য, মেডিক্যাল সায়েন্সের জন্য, ঐতিহ্যের জন্য, স্থাপত্যকলার জন্য এই বাংলাদেশে ফিরে আসবে। সেই দিনের স্বপ্ন দেখে আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন