ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ঈদে মিলাদুন্নবী

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হবে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১:০৪, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:০৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন

প্রতীকি ছবি। সংগৃহীত।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) পৃথক বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

আগামীকাল শনিবার সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হবে। এদিন সরকারি ছুটি।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে আমি দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। আজ সেই মহিমান্বিত দিন, যেদিন আল্লাহর সর্বশেষ রসুল, হজরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়ায় আগমন করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তাঁর আগমন মানবজাতির জন্য বয়ে আনে রহমত, শান্তি ও মুক্তির বার্তা। তৎকালীন আরব সমাজের অন্যায়, অসত্য ও অন্ধকার দূর করে মানুষকে তিনি আলোর পথ দেখান।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরান নাজিল করে মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর জগতে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেন। নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে হজরত মুহাম্মদ (সা.) অসীম ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও সীমাহীন ত্যাগের মাধ্যমে শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সমগ্র পৃথিবীতে পবিত্র কোরানের মর্মবাণী ছড়িয়ে দেন।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, মহানবি (সা.) একটি সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সকলের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে উম্মতদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং ইহকাল ও পরকালীন কল্যাণ নিশ্চিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতিটি কথা, কর্ম ও জীবনাদর্শ সকল মুসলমানের জন্য অবশ্য অনুসরণীয়।

অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস তাঁর বাণীতে বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’তথা সমগ্ৰ বিশ্বজগতের জন্য রহমত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে সমগ্র মানবজাতির হেদায়েত ও নাজাতের জন্য প্রেরণ করেছেন।

তিনি বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়ায় এসেছিলেন ‘সিরাজাম মুনিরা’ অর্থাৎ আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, দাসত্ব ও পাপাচারের অন্ধকার থেকে মানুষকে মুক্তি ও আলোর পথ দেখাতে শান্তি, প্রগতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আল্লাহর প্রতি অসীম আনুগত্য ও ভালোবাসা, অনুপম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, অপরিমেয় দয়া ও মহৎ গুণের জন্য পবিত্র কোরানে মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনকে বলা হয়েছে ‘উসওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ সুন্দরতম আদর্শ। তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য যে অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, তা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে।

প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) সবার জীবনে শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ বয়ে আনবে।

দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে এবং জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়াল (হিজরি) তারিখে পবিত্র মক্কায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। এ দিনেই তিনি ইন্তেকাল করেন। তাই দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনের উপলক্ষ।

ইউএনবি আরেক খবরে বলেছে: ১৪৪৭ হিজরি সনের পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আগামীকাল শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হবে।

এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ১৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসহ সারাদেশে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

শনিবার সকাল থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। রাজধানীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা এবং কালিমা তাইয়্যেবা লেখা ব্যানার ও পতাকা দিয়ে সাজানো হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কিরাত ও নাত প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক আসর, আরবি খুতবা রচনা প্রতিযোগিতা, সেমিনার আয়োজন এবং বিশেষ স্মারক প্রকাশ। এছাড়া ১২ রবিউল আউয়াল থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে দুই সপ্তাহব্যাপী ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে, আর পত্রপত্রিকা প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র।

দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় সংগঠন, ওয়াকফ প্রশাসক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং হজ অফিসগুলো আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, নাত পাঠ এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। এসব কর্মসূচিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা এবং ইসলামের শান্তি, অগ্রগতি, সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার ও নারী মর্যাদার বার্তা তুলে ধরা হবে।

শিশুদের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নাত পাঠ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে।

এ উপলক্ষে দেশের সব সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশু নিবাস ও বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালন করবে।

আরও পড়ুন