ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

৬ কার্তিক ১৪৩২, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিয়ালবাড়ি অগ্নিকান্ড

বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ব্যাহত উদ্ধারকাজ, মালিক লাপাত্তা

’দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১:৩৯, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২১:৪৪, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ব্যাহত উদ্ধারকাজ, মালিক লাপাত্তা

মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে প্রাণবিনাসী অগ্নিকান্ড এলাকার আশপাশ পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ছবি: নাঈম হোসেন তালুকদার।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ গঠিত একটি তদন্ত দল মিরপুরের মর্মান্তিক শিয়ালবাড়ি অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন। শারমিন মুরশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসায়ীরা কোনো নিয়ম-নীতি ছাড়াই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি গার্মেন্টস কারখানা সংলগ্ন রাসায়নিক গুদামে লাগা ভয়াবহ আগুন গতকাল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলেও, গুদাম থেকে অনবরত বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হওয়ায় উদ্ধার ও তদন্ত কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, গুদাম ও কারখানার মালিকেরা আত্মগোপন করেছেন বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে, প্রতিষ্ঠান দুটির কোনোটিরই বৈধ লাইসেন্স ছিল না। এই ঘটনায় ১৬ জন প্রাণ হারিযেছেন। 
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান জানান, গুদাম থেকে এক ধরনের ক্ষতিকর গ্যাস বের হচ্ছে, যা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ কারণে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ ফুটের মধ্যে কোনো মানুষজনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি সকলকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ জানান। ফায়ার সার্ভিসের দুজন সদস্য রাসায়নিক সুরক্ষা জ্যাকেট পরে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলেও ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলীর কারণে কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পেরে ফিরে আসেন। সহকারী পরিচালক আরও জানান, গুদামটি রাসায়নিক কারখানা হওয়ায় আগুন নেভাতে এবং পুরোপুরি তদন্ত শেষ করতে অনেক সময় লাগবে। কারণ, আগুনের ফলে রাসায়নিক বিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং এখনও টক্সিক গ্যাস তৈরি হচ্ছে।
রাসায়নিক গুদামটির মালিকের নাম আলম, যিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক বলে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে। ফায়ার সার্ভিস আরও জানায়, যে দুটি প্রতিষ্ঠানে আগুন লেগেছে, সেগুলোর কোনোটিরই প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছিল না। সাদা ও প্রচন্ড ধোঁয়ার কারণে মেইন গেট খুলে ভেতরে অপারেশন চালানো কর্মীদের জন্য নিরাপদ নয় বলে ফায়ার সার্ভিস উল্লেখ করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি বিশেষজ্ঞ দল। তারাই ফায়ার সার্ভিস টিমকে এই সময়ে কাজ না করতে পরামর্শ দিয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ গঠিত একটি তদন্ত দলও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন। শারমিন মুরশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসায়ীরা কোনো নিয়ম-নীতি ছাড়াই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং এই মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান। 

 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন