ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

৬ কার্তিক ১৪৩২, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

দু’টি তদন্ত কমিটি গঠিত

চট্টগ্রামের টেক্সটাইল কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৩:০৮, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:১৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামের টেক্সটাইল কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: বাসস।

 

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) সাত তলা একটি কারখানা ভবনে গতকাল বিকেলে লাগা আগুন ১৭ ঘন্টা পর অবশেষে আজ সকালে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ নির্ধারণের জন্য ফায়ার সার্ভিস এবং সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশনস) মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, তারা সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও আগুন এখনো পুরোপুরি নিভানো যায় নি, রিপোর্ট বাসসের।

তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস এবং সিইপিজেড কর্তৃপক্ষের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন, কারণ কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি’।

তিনি আরো বলেছেন, ‘দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে’।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সাত তলা বিশিষ্ট একটি ভবনের সপ্তম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবনটিতে গামছা প্রস্তুতকারক অ্যাডাম ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস এবং চিকিৎসা পণ্য কোম্পানি জেইহং মেডিকেল প্রোডাক্টস বিডি কোং লিমিটেডের গুদাম ছিল। অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের প্রচেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত দলবদ্ধ প্রচেষ্টার কারণে আগুন পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়েনি।

সূত্র জানায়, ভবনটি নিয়ম মেনে চলছিল না। যার ফলে দমকলকর্মীদের পক্ষে আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়ে। তা সত্ত্বেও, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অন্যান্য সংস্থার সাথে মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

সূত্র আরো জানায়, ভবনের প্রায় এক-চতুর্থাংশের ক্ষতি হয়েছে।

তাজুল ইসলাম পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, কমিটি আগুনের কারণ নির্ধারণ এবং ভবনের কাঠামোগত অখণ্ডতা মূল্যায়নের জন্য ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।

তাজুল ইসলাম বলেছেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরার দু’টিসহ মোট ২৫টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে।

সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহান অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

তিনি উৎপাদন শুরু করার আগে অগ্নি সম্মতি সনদ গ্রহণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বাসস’কে বলেছেন, ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক প্রদত্ত রোবোটিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন বাসস’কে বলেছেন, ‘ভবনের ভেতরে অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের লড়াই করতে হয়েছে।’

অ্যাডাম ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলসের আর্থিক ব্যবস্থাপক রিফাত হাসান বলেছেন, কাঁচামাল এবং কাপড় রাখা স্টোরেজ এলাকায় আগুন লাগার পর সকল শ্রমিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেইহং মেডিকেলের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বোরহান উদ্দিন বলেছেন, ষষ্ঠ এবং সপ্তম তলায় সংরক্ষিত তাদের বেশিরভাগ কাঁচামাল এবং রপ্তানি-প্রস্তুত পণ্য আগুনে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।

জেইহং-এর একজন কর্মী ইয়াসিন বলেছেন, দুপুরের খাবারের পর একজন মহিলা সহকর্মী তৃতীয় তলায় পোড়া গন্ধ পান। তারা সপ্তম তলায় ঘন কালো ধোঁয়া এবং আগুন দেখতে পান। তারা দ্রুত অন্যদের সতর্ক করে এবং ভবনটি খালি করে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন