গোবিন্দ শীল
প্রকাশ: ১১:১১, ১ আগস্ট ২০২৫
রাজস্ব উৎপাদন করে চলেছে রাতের শহর
রাতের অড্ডা নিয়ে বা সন্ধার পরে নারী-পুরুষের সময় কাটানো নিয়ে বাংলাভাষায় অনেক গান রয়েছে। তখন অবশ্য ফুডকোর্টের ধারণাটি ছিল না। তাতে কি? হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ১৯৫৯ সালে দ্বীপ জ্বেলে যাই ছায়াছবিতে গেয়েছেন, এই রাত তোমার আমার, ওই চাঁদ তোমার আমার, শুধু দুজনের…। ষাটের দশকে গানটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে, রাত নিয়ে সবচেয়ে বেশি রোমান্টিক গান রচিত হয়েছে ফরাসি ভাষায়। আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম অভিসার নিয়ে, নিশিতে প্রেমের আঁকুতি নিয়ে ঢের গান লিখেছেন। অদিতি মহসিন গাইছেন: কাল রাতের বেলা গান এলো মোর মনে, তখন তুমি ছিলে না গো ছিলে না। আর শ্রাবণী সেন আমাদেরকে নিয়ে যেতে চাইছেন অভিসারে…আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার, পরাণ সখা বন্ধু হে আমার! প্রেম পাগল কাজী নজরুল ইসলাম তো আরেক কাঠি ওপরে। হরিমতী দেবী সেই ১৯৩৪ সালে গাইলেন, আজ নিশিতে অভিসার তোমারই পথে, বনের পাড়ে নিরালায়…! আর এযুগের মন মাতানো গায়ক মান্না দে গাইলেন: সুন্দরী গো, দোহাই, দোহাই, মান করে না, আজ নিশিতে কাছে থাকো না বলো না (কথা পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়)।
রাত বদলে দিতে পারে ঢাকার অর্থনীতি
রাজধানী ঢাকার রাতের অর্থনীতির এক নতুন উচ্চতায় যাবার উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বসুন্ধরা ও যমুনা ফিউচার পার্কের ফুডকোর্ট তৈরি হবার পর থেকে শহরের অনেক স্থানে এই ধারণাটি জনপ্রিয় হতে থাকে। পরবর্রতীতে শহরের নানা স্থানে, যেমন মিরপুর ডিওএইচএসের প্রবেশ মুখে, মিরপর এক নম্বর ঈদগাহ মাঠের পাশে, উত্তরায় বউ বাজার ফুড কোর্ট, কেরানী গঞ্জের শরীফ ফুডকোর্ট, বসিলার অদূরে মধুসিটি ফুডকোর্ট, পূর্বাচল ৩০০ ফিট রাস্তার পশে নীলা মার্কেট সংলগ্ন ফুডকোর্ট অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এগুলো বিশেষত সন্ধায় পারিবারিক ও সামাজিক আড্ডার অন্যতম স্থান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এর সাথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মেট্ররেল ব্যবস্থা। মেট্ররেল চালু হবার পর থেকে দিয়াবাড়ি সহ নানা ষ্টেশনের পাশেই নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন স্বাদের রকমারি রেস্তোরাঁ। উত্তরা মধ্য স্টেশনের পাশে ১৩ নং লেক বরাবর নজর কাড়া রেস্তোরাঁ ও ফুডকোর্ট বানানো হয়েছে। শুধু ফুডকোর্ট নয়, জনপ্রিয় হচ্ছে স্ট্রীট ফুডের দোকানগুলোও।
সান্ধ্য অর্থনীতি
উইকিপিডিয়া বলছে, সান্ধ্যকালীন অর্থনীতি বলতে যারা দিনের কর্মকান্ড শেষে বা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করার পরে সন্ধ্যায় যেসকল কাজে জড়িয়ে পড়েন সেগুলোকে বোঝানো হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে বিনোদন এবং রাতের জীবন (Night Life) যা সন্ধা ৬টা থেকে শুরু করে সকাল ৬টা অব্দি চলতে পারে। সে হিসেবে ঢাকার পাইকারী কারওয়ান বাজার, শনির আখড়া ও শ্যামপুর বাজার এবং মিরপুর দিয়াবাড়ি পাইকারী বাজার উল্লেখযোগ্য। আমাদের আশেপাশের দেশগুলোতে ডাইনিং, থিয়েটার, পাব এবং ক্লাব রাতের অর্থনীতির অন্যতম খাত হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে অপরাধ এবং অসামাজিক আচরণের ঘটনাগুলো আমাদের মনে রাখতে হবে। রাতে আন্ডার ওয়ার্লডের কাজ বেড়ে যায়।
রাত কেন প্রিয়?
সারাদিনের ক্লান্তিময় কাজের শেষে সন্ধায় যখন মানুষ ঘরমুখো হতে চায়, ঠিক তখনই কে যেন গেয়ে উঠে, “বিমূর্ত এই রাত্রি আমার, মৌনতার সুতোয় বোনা, একটি রঙ্গিন চাদর (ভূপেন হাজারিকা) “ অথবা, এই বৃষ্টি ঝরা রাতে চলে যেও না (রুনা লায়লা)। তাই, কেউ বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডায়, কেউ যায় পানশালায়। এই যে রাতের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ, তার গুরুত্ব এতটাই বেড়েছে যে অনেক শহরে এখন রাতের মেয়র নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রাত্রিকালীন অর্থনীতি (Night Time Economy) দ্রতই উল্লেখযোগ্য হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। আগেই বলেছি, অনেক খোলামেলা জায়গায় গড়ে উঠছে ফুড কোর্ট, চা-শরবতের দোকান, বিদেশী খাবারের বিশেষ রেস্তোরাঁ, ইত্যাদি। অর্থনীতিতে তৈরি হচ্ছে নতুন খাত, সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান এবং সর্বোপরি অর্থনীতিতে চাহিদা প্রসারিত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি)। এগুলোর জন্য দরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলা কমিয়ে এসব ব্যবসা-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করা। সহসাই ট্যাক্স-ভ্যাট বসিয়ে নতুন ব্যবসার ঠুঁটি চেপি ধরা উচিৎ নয়।
ক্রান্তি লগ্নে রাতের ঢাকার উজ্জ্বল সম্ভাবনা
অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাতের ঢাকার অর্থনীতি দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি হতে পারে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত সহ সকল শ্রেণীর মানুষের কর্মযজ্ঞের স্থান। রাজধানী শহরে সন্ধার পরে সংঘঠিত হয় নানা রকম অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের রিনিঝিনি । জমে উঠে ইনডোর খেলাধূলার ক্ষেত্র। পাশ্চাত্য ও পূর্বের কিছু দেশের অনেক ধরণের সান্ধ্য বিনোদনের মডেল ক্রমে চলে আসছে আমাদের রাজধানী শহরে। এটির ভাল-মন্দ কি তা আজকের আলোচনায় নয়। ঢাকায় সৃজনশীল মানুষের সন্ধার আড্ডার জায়গা ৭০ ও ৮০ এর দশকে ছিল স্টেডিয়াম মার্কেটের দোতলা (বিশেষত ম্যারিয়েটা বুকস্)। পাকিস্তান আমলে জনপ্রিয় ও প্রয়োজনীয় বইয়ের দোকান সেখানে দিনমান আড্ডার জন্ম দেয়। পরে সেটি নিউমার্কেটে এবং ‘৯০-এর দশকে শাহবাগের আজিজ মার্কেটে চলে আসে। বিখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাদের একসময় নীলক্ষেতের সরকারি ভাটিখানায় চরম আড্ডা ছিল। এগুলো অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক গুরুত্ব বহন করতো। কারণ সরকারকে যথেষ্ট কর দিতে হতো। সেগুলো, এখন আর নেই। সেই জায়দা দখল করেছে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছলদের জন্য লাইলেন্সধারী ক্লাব ও বারগুলো।
আনুষ্ঠানিক খাতও ব্যস্ত থাকে রাতে
ঢাকায় নানারকম শিল্প কারখানা বিশেষ করে পোষাক শিল্প-কারখানা রাত ১০ অব্দি চালু থাকে। পিক সিজনে কাজ চলে সারা রাত, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিফটে কাজ হয় পোষাক কারখানায়। এছাড়া, পরিবহন, রিকশা, সিএনজি, ট্যাক্সি ইত্যাদিও রাতের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। রাতে বাড়ি ফেরার পথে কর্মব্যস্ত লোকজন মুদি দোকান, সুপার শপ, ঔষধের দোকান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান থেকে তাদের দরকারি সামগ্রী কিনে থাকেন। এসব সেক্টরে কাজ করে লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া আছেন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, ডাক্তার, নার্স, গণমাধ্যম কর্মী, ও বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ। আছেন ডেলিভারি ম্যান, রাইড শেয়ারিং ইত্যাদি ব্যবসার সাথে জড়িত কর্মী। সবশেষে দায়িত্বে আসেন রাতের নিরাপত্তা কর্মী। অফিস, মার্কেট, আবাসিক এলাকা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা তাঁরা ঐসব প্রতিষ্ঠানের পাহারার দায়িত্বে থাকেন।
রাতের সেবায় এগিয়ে এল নাইটলাইফ এসোসিয়েশন
রাতের অর্থনৈতিক, সাংষ্কৃতিক ও তার সৃজনশীল গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১২ সালে স্পেনের বার্সেলোনা শহর প্রথম ”ইন্টারন্যাশনাল নাইটলাইফ অ্যাসোসিয়েশন (আইএনএ)” তৈরি করে। এটি বিশ্বের প্রথম অলাভজনক সংস্থা যা বিশেষভাবে নাইটলাইফ অর্থনীতির প্রধান অংশীদারদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য গঠিত হয়। এর সাথে যুক্ত রয়েছেন, রেস্তোরাঁ, বার, ক্লাব, ডিস্কো, লাউঞ্জ, হোটেল এবং নাইটলাইফ সেক্টরের সাথে অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।
আইএনএ হল সারা বিশ্বের নাইটলাইফ ব্যবসা সংস্থার একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন, যার সদস্যদের মধ্যে পৃথিবীর সেরা ক্লাবগুলি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এখন ছয়টি মহাদেশের অন্তত ৩০ টি দেশের নানা বিনোদন ক্লাব ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এই এসোসিয়েশনের সদস্য হয়েছে।
আমস্টারডাম ও আরও ৬০ শহরে আছেন রাতের মেয়র
মিরিক মিলান হলেন আমস্টারডাম শহরের প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রাঞ্জল আর্মসটার্ডাম শহরের ”রাতের মেয়র” নির্বাচিত হন ২০১২ সালে। তিনি শহরের বিনোদন, নাইটলাইফ শিল্প, নগরের বাসিন্দাদের ও নির্বাচিত কর্মকর্তাদের নিয়ে একযোগে কাজ করেছেন।
মজার বিষয় হচ্ছে, ”নাইট মেয়র” শহরের প্রকৃত মেয়রের মতো কোনও সরকারি কর্মকর্তা নন। তিনি আসলে একটি স্বাধীন অলাভজনক সংস্থার প্রধান যিনি শহরের নাইটলাইফকে সুস্থ, প্রাণবন্ত এবং নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে থাকেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক নগরের নীতিমালাভিত্তিক সংস্থা অনুসারে এ বছরের জুলাই অব্দি বিশ্বব্যাপী ৬০টিরও বেশি শহরে রাতের মেয়র রয়েছেন। তাঁরা রাতের সময়ের অর্থনীতি পরিচালনা এবং কার্যক্রম প্রচারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে "নাইট মেয়র" পদ বা সমতুল্য প্রাশাসনিক কাঠামো তৈরি করেছেন। করোনা মহামারির সময়ে (২০২০ সালে) মাত্র ১২টি মার্কিন শহর রাতের মেয়র ছিলেন যা ২০২৩ সালের মধ্যে ৫০টিরও বেশি শহরে এই পদটি ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও মেয়রের পরিবর্তে শহরগুলো ’নাইট কমিশনার’, ‘নাইটলাইভ বিজনেস এ্যাডভোকেট,’ ’রাত-দিনের অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদূত’ প্রভৃতি নাম দেয়া হয়েছে। যেমন, ইউরোপের লন্ডন, প্যারিস, জুরিখ, বার্লিন এবং বার্সেলোনায় এবছর প্রথম ‘নাইট কমিশনার’ নিযুক্ত করেছে। রাতের মেয়র ধারণাটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ দলীয়ভাবে এটিকে সমর্থন করে সামগ্রিক নগর ব্যবস্থাপনার সাথে এটিকে সংযুক্ত করেছেন।
রাজস্ব উৎপাদন করে চলেছে রাতের শহর
২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী সন্ধ্যাকালীন অর্থনীতির বাজারের আকার ছিল ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩৩ সালের মধ্যে ২.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, গবেষণা করে বলছে বিবিসি সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান।
নিউইয়র্ক শহরে বার্ষিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্যে ৮৫ বিলিয়ন পাউন্ডের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড রাতের অর্থনীতিতে অবদান রাখে। শুধু লন্ডনে এর পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড। রাত এখন দিনের কর্মযজ্ঞের সাথে পাল্লা দিচ্ছে।
এদিকে, সিডনি ও নর্থ সাউথ ওয়েল্স জোনে বার্ষিক প্রায় ১০২ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সম পরিমাণ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হচ্ছে যা সিডনির ক্ষেত্রে প্রায় ৫.৭ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
বসে নেই মধ্যপ্রাচ্য
মধ্যপ্রাচ্যও কিন্তু বসে নেই। সউদি আরব ও অন্যান্য মধ্য প্রাচ্যের দেশে সন্ধ্যার সময় বছরে মোট ২৪ থেকে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি থেকে আসতে পারে। ফলে তেল-বহির্ভূত জিডিপি বার্ষিক ০.৪-০.৫% বৃদ্ধি পাবে এবং পর্যটনের ক্ষেত্রে জিডিপি বাড়বে ২.৪% হারে।
এছাড়াও, রিয়াদ সিজনের মতো ফ্ল্যাগশিপ অনুষ্ঠান ১১ মিলিয়নেরও বেশি দর্শনার্থী আকর্ষণ করেছে এবং এখান থেকে ৬ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। রিয়াদ সিজন হলো সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত একটি বার্ষিক বিনোদন, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া উৎসব। এটি সৌদি ভিশন ২০৩০ এর একটি অংশ এবং প্রতি বছর শীতকালে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সমগ্র আরব আমিরাতে রাতে--খাবার, পানীয়, বিনোদন এবং ঘোরাঘুরি মিলিয়ে-- বার্ষিক প্রায় ২৫-৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়। রাতের দুবাইয়ে বিলাসবহুল খুচরা বিক্রয় ও বিনোদন খাত থৈকে আসে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ আয়।
এগিয়ে চলছে ঢাকাও
শীর্ষ একটি বাংলা দৈনিকের একটি প্রতিবেদন বলছে, শুধু মৌলবীবাজার পাইকারি মার্কেটে দিনে এক হাজার কোটি টাকার ওপর লেনদেন হয়। আরেক হিসেবে দেখা যায় পুরো ঢাকা শহরে রাতে অন্তত ৪ থেকে ৫.৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বণিজ্য হয়ে থাকে।
”রাতে অনেক লোকজন ফুডকোর্টে ভিড় জমাচ্ছেন, স্ট্রীটফুডের দোকান বেড়ে চলেছে তা ঢাকার রাস্তায় রাতের জ্যাম দেখে বোঝা যায়। সরকারের উচিৎ এই সেক্টরকে কিভাবে সহায়তা দেওয়া যায় তা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করা,” দেশ রূপান্তরকে বলেন বিশিষ্ট অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক ও লেখক সাইফুল হোসেন। তাঁর একটি জনপ্রিয় বই হলো "দি আর্ট অব পারসোনাল ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট"। পরিশেষে বলা য়ায়, ঢাকাতেও রাতের মেয়র নিয়োগ দেয়া হোক। এগুলো স্ট্রীট ফুড আনুষ্ঠানিক খাতে আনা হোক। প্রয়োজনে সংষ্কার করা হোক মেট্রপলিটান পুলিশ অ্যাক্ট—১৯৮৪। এই আইনে কনসার্ট, বার, জনসমাবেশ, বিনোদন ইত্যাদির অনুমতি দেয়া, নিয়ন্ত্রণ করা ও আইন শৃঙ্খলা দেখা হয়। সমন্বিত কর্মসূচি নিলে রাতের ঢাকার অর্থনীতি যে আরো জ্বলজ্বল করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।