নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৫, ১৭ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১২:২৬, ১৭ আগস্ট ২০২৫
প্রতীকি ছবি।
সেপ্টেম্বর এবং তার পরবর্তী মাসগুলোতে তামা, অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের মতো শিল্প ধাতুগুলোর ভবিষ্যৎ প্রধানত নির্ভর করছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো বড় অর্থনীতির পরিস্থিতির ওপর।
চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশেষ করে প্রধান উৎপাদন এবং নির্মাণ খাতে শিল্প ধাতুগুলোর দামের ওপর নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ধাতব পদার্থের দামের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেয়েছে চীনের। বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প ধাতু ব্যবহারকারী এবং উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীনের অর্থনৈতিক নীতি এবং আবাসন খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকারের প্রণোদনামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও, চীনের অর্থনীতির মন্থর গতি চাহিদা কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। একাধিক সূত্র ব্যবহার করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালে বৃদ্ধির পর ২০২৫-২৬ সালে ধাতুর দাম কমার কারণ রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ধাতু ও খনিজ পদার্থের মূল্য সূচক ২০২৫ সালে ১০ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ৩ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশেষত, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, লৌহ আকরিক এবং দস্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে তীব্র পতনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পূর্বাভাসগুলি বিশ্বব্যাপী চাহিদার দুর্বলতার প্রতিফলন ঘটায়, যার মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প ধাতুর ভোক্তা চীনের মন্দাও অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, ভূ-রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক উত্তেজনাও ধাতব বাজারকে প্রভাবিত করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে শুল্ক এবং বাণিজ্যিক উত্তেজনা অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, যা সরবরাহ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে পারে। এর ফলে কিছু অঞ্চলে দাম সাময়িকভাবে বাড়লেও, সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক বাজারে এক ধরনের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে।
মূল্যবান ধাতু (সোনা, রুপা)
মূল্যবান ধাতুগুলোকে প্রায়শই "নিরাপদ আশ্রয়" (safe-haven) হিসেবে দেখা হয় এবং এদের দাম সাধারণত শিল্প ধাতুগুলোর চেয়ে ভিন্ন কারণে ওঠানামা করে।
চলমান ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সোনাকে একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ধরে এর চাহিদা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দামকে আরও বাড়াতে পারে।
এদিকে,যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলো সোনার দামের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। সুদের হার কমানোর ক্ষেত্রে নরম নীতি ডলারকে শক্তিশালী করতে পারে, যা সাধারণত সোনার ওপর নিম্নমুখী চাপ তৈরি করে। তবে, বছরের শেষের দিকে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা সোনার দাম বৃদ্ধিকে সমর্থন দিতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে যে, বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম বর্তমান দামের চেয়ে ৫% পর্যন্ত বাড়তে পারে অথবা একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে পারে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের মতে, এর ফলে সম্ভাব্য বার্ষিক রিটার্ন ইতিবাচক ২৫% থেকে ৩০% হতে পারে। সুদের হার কমা, চলমান অনিশ্চয়তা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী চাহিদা সোনার দামকে সমর্থন দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, দাম বেড়ে গেলে ভোক্তাদের চাহিদা কমতে পারে এবং পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে পারে।
রুপার শিল্প চাহিদা: সোনা মূলত একটি মূল্যবান ধাতু হলেও, রুপা সৌর প্যানেল এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ধাতু। এই খাতগুলো থেকে শক্তিশালী চাহিদা এবং চলমান সরবরাহ ঘাটতি আগামী মাসগুলোতে রুপার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আজকের (আগস্ট ১৭) কতিপয় ধাতব পদার্থের মূল্য নিম্নরুপ:
স্বর্ণ : প্রতি ট্রয় আউন্স (t.oz) $৩৩৩৫.৬০, পরিবর্তন ০.০৮
রুপা : প্রতি ট্রয় আউন্স (t.oz) $৩৭.৯৯৯, পরিবর্তন ০.০১১
তামা : প্রতি পাউন্ড (Lbs) $৪.৪৭১২, পরিবর্তন ০.০০১৮
স্টিল : প্রতি টন (T) ৩১৯৭.০০ ইউয়ান, বা ৪৪৭.৫৮ ডলার ।