ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ইউক্রেনের ড্রোন হামলা

রাশিয়ার সর্ব বৃহৎ একটি তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত

খোদ রাশিয়াতে পেট্রোলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৮:৫৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাশিয়ার সর্ব বৃহৎ একটি তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত

আগুন যাতে না লাগে সেজন্য আগেই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ছবি: ইউরো নিউজ।

 

ইউক্রেনের সারি সারি ড্রোন রবিবার রাতে রাশিয়ার একটি অন্যতম বৃহত্তম তেল শোধনাগারে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে সেখানে বিস্ফোরণ ও আগুন লেগে যায়। সামরিক বাহিনী এবং রাশিয়ার কর্মকর্তারা উভয়েই এই হামলার কথা নিশ্চিত করেছেন।

হামলাটি রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের কিরিশি শোধনাগারকে লক্ষ্য করে করা হয়ে। এই শোধনাগারটি রাশিয়ার অন্যতম শীর্ষ তিনটি তেল উৎপাদনকারী এবং এটি প্রতিদিন ৩৫০,০০০ ব্যারেলের বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করতে পারত, খবর ইউরো নিউজের।

কিয়েভ বলছে, রাশিয়ার তেল শিল্পকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে কারণ এটি ক্রেমলিনের যুদ্ধের অর্থায়ন করে। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফের মতে, কিরিশি শোধনাগারে বিস্ফোরণ ও আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রবিবার ভোররাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে তারা ভূপাতিত করেছেন। লেনিনগ্রাদের গভর্নর আলেকজান্ডার ড্রোজদেঙ্কো বলেছেন, কিরিশি এলাকায় তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে এবং এর ধ্বংসাবশেষের কারণে আগুন লাগে। তিনি আরও জানান, আগুনে কোনো বেসামরিক নাগরিক হতাহত হননি এবং আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে, শোধনাগারের ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে রাশিয়ার কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

এই হামলার একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও রাশিয়ার তেল কেনা দেশগুলোর জন্য গুরুতর পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন। শনিবার ট্রাম্প বলেছেন, যদি ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করে, তাহলে তাদের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি মনে করেন, রাশিয়ার যুদ্ধের প্রধান অর্থায়ন বন্ধ করা হলে ক্রেমলিন আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উভয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তিনি যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছেন, কিন্তু এই প্রক্রিয়ার গতি নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বর্তমানে রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা বৃদ্ধি এবং ঋতুভিত্তিক চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে পেট্রোলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

দেশের কিছু অঞ্চলে পেট্রোল পাম্পগুলো শুকিয়ে গেছে। গাড়িচালকদের দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে, এবং কর্মকর্তারা পেট্রোল রেশনিং বা বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই সংকট মোকাবিলায় রাশিয়া পেট্রোল রপ্তানি স্থগিত করেছে। কর্মকর্তারা বুধবার ঘোষণা করেন যে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেট্রোল রপ্তানিতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে এবং মধ্যস্বত্বভোগী ও ব্যবসায়ীদের জন্য আংশিক নিষেধাজ্ঞা থাকবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন