ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ আশ্বিন ১৪৩২, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

র‍্যালিতে অংশ নিয়ে দুজন নিহত হয়েছেন

চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে লাখো মানুষের ঢল

পূর্বকোণ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ১৩:৩১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৫৭, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে লাখো মানুষের ঢল

ফাইল ছবি: সংগৃহীত।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে দেশের বৃহত্তম ধর্মীয় শোভাযাত্রা ৫৪তম জশনে জুলুস চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী জুলুসকে ঘিরে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে ষোলশহর, বিবিরহাট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, দুই নম্বর গেট, জিইসি এলাকা।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা থেকে জুলুস শুরু হয়।

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথি হিসেবে রয়েছেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)। বৃহস্পতিবার থেকেই তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।

আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের জুলুস। আয়োজকরা জানিয়েছেন, শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ এবং খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাসুল (সা.)-এর শুভাগমনের পনেরশ’ বছর পূর্তি এ বছর। একইসঙ্গে আনজুমান ট্রাস্ট শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা হিসেবে খ্যাত এ জুলুস এখন চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মানবিক কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল থেকে চট্টগ্রামে প্রথম জশনে জুলুসের সূচনা হয়। গাউসে জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ (রহ.)-এর দিকনির্দেশনায় বলুয়ারদীঘি পাড় খানকাহ শরিফ থেকে আনজুমান সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়েছিল প্রথম আয়োজন।

এদিকে, জুলুস উপলক্ষ্যে বর্ণিল সাজে সেজেছে চট্টগ্রাম। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তোরণ। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও পুঁতে দেওয়া হয়েছে। বসেছে খাবারসহ বিভিন্ন আইটেমের অস্থায়ী দোকানও। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা বিতরণ করছেন শরবত। পুরো এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। একইসঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন।

জুলুসে অংশ নেওয়া ইউনূস আহমেদ নামে একজন বলেন, কর্ণফুলী থেকে জুলুসে এসেছি। প্রতিবছরই আসি। এই দিনটির অপেক্ষায় থাকি।

ট্রাকে করে জুলুসে পানি বিলি করছিলেন নূর আলম। তিনি বলেন, জুলুসে সওয়াবের উদ্দেশে পানি বিতরণ করছি। আশেকে রাসুলদের জন্য আজ বড় আনন্দের দিন। 

ইউএনবি যোগ করেছে: 

চট্টগ্রামে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুস র‍্যালিতে অংশ নিয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। এদের একজন ভিড়ের চাপে, অন্যজন একটি সেতু ভেঙে পড়ে মারা গিয়েছেন। এ সময় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সোয়া দুপুর ১২টার দিকে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে মো. মাহফুজ (৩৫) নামের একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত শামসুল আলমের ছেলে। আহতদের মধ্যে ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশিক জানান, আজ (শনিবার) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মাহফুজ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর ভিড়ে পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

অপরদিকে, মোহাম্মদপুর ষোলশহর এলাকায় মানুষের ভিড়ে একটি ছোট ব্রিজ ভেঙে পড়ে একজন নিহত ও কমপক্ষে দশজনের মতো আহত হয়েছেন।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান জানান, জসনে জুলুস শেষ করে লোকজন চলে যাওয়ার সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়েছে।’

 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন