ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

৬ কার্তিক ১৪৩২, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

বিজিএমইএর কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন

অগ্নিকাণ্ডটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:৪৯, ২০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১১:১৪, ২০ অক্টোবর ২০২৫

অগ্নিকাণ্ডটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি

বিজিএমইএ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ছবি: বিজিএমইএ।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স ভবনে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি মনে করে, এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ফলে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

গতকাল রবিবার বিজিএমইএ'র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, বলছে বিজিএমইএ’র একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পরিদর্শনকালে তারা বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এর সাথে সাক্ষাৎ করে পোশাক উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ প্রকাশ এবং পোশাক শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান এবং মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বিজিএমইএ নেতাদেরকে শিল্পের আমদানি করা কাঁচামাল ৭২ ঘণ্টার স্থলে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে খালাস করার নির্দেশনা দিয়েছেন এবং বলেছেন আপাতত আমদানিকৃত কাঁচামালগুলো কার্গো ভিলেজের ৩ নম্বর ভবনে রাখা হবে। 

বিজিএমইএ পোশাক শিল্পের এই বিপুল ক্ষতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের কাছে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর জন্য জোরালোভাবে অনুরোধ করছে:

• এই অগ্নিকান্ড দূর্ঘটনা নাকি নাশকতা, সে বিষয়ে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত শুর করা ।
• ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের জন্য সার্বিক সহযোগিতা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।
• পোশাক শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থে বন্দরের বর্তমান পরিস্থিতি নির্বিশেষে যেন অন্যান্য নিয়মিত শিপমেন্টগুলোও স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে, তার জন্য সকল প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুততর করা।
• রপ্তানি পণ্য খোলা জায়গায় না রেখে বিমানবন্দরের স্পর্শকাতর এলাকায় পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক, যাতে বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি না হয়।

বিজিএমইএ ঢাকার বিমান বন্দরে পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত মালামাল ৩৬ ঘন্টার মধ্যে খালাস করার জন্য সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছে।

বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে আরও ছিলেন সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান, পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান, পরিচালক রুমানা রশীদ, পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল, সাবেক পরিচালক নজরুল ইসলাম, বিজিএমইএ এর জনসংযোগ ও প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদ কবির, এয়ারপোর্ট সেলের চেয়ারম্যান মোঃ নিশের খান প্রমুখ।

বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কার্গো ভিলেজের ৮ নম্বর গেটের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিএমইএ নেতারা বলেন, পোশাক শিল্পে উচ্চমুল্যের পণ্য পরিবহন এবং জরুরি শিপমেন্টের ক্ষেত্রে আকাশপথ ব্যবহার করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের ফলে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যসামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ধ্বংস হওয়া মালামালের মধ্যে পোশাক তৈরির মূল্যবান কাঁচামাল, এক্সেসরিজ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অনেক স্যাম্পল (নমুনা) পণ্য ছিল। এই স্যাম্পলগুলো হারানো মানে ভবিষ্যৎ অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

বিজিএমইএ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান সাংবাদিকদের জানান, বিজিএমইএ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সদস্যদের নির্ধারিত ফরমেটে ক্ষতি হওয়া পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং তথ্য দ্রুত সংগ্রহের জন্য একটি অনলাইন ডেটা কালেকশন পোর্টালও খোলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজিএমইএ খুব দ্রুত সমস্ত সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থা) এর সঙ্গে একটি সমন্বয় সভা করবে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন