শিরোনাম
মোঃ নাইম হোসেন তালুকদার
প্রকাশ: ২০:৫৬, ২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৩৯, ২ নভেম্বর ২০২৫
আফজাল হেসেনের ছাগলের মাংসের দোকান। ছবি: মোঃ নাইম হোসেন তালুকদার।
যেখানে ঢাকার অধিকাংশ মাংসের দোকানে গরুর মাংসের ভিড়ে ছাগলের মাংস খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর, সেখানে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আফজাল হোসেন। তিনি চালু করেছেন একটি বিশেষ দোকান, যেখানে শুধুমাত্র ছাগলের এবং ভেড়ার মাংস বিক্রি করা হয়। তার এই ভিন্নধর্মী ব্যবসায় অল্প দিনেই তিনি ভোক্তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
আগে অন্যের দোকানে কাজ করলেও, আফজাল হোসেন লক্ষ্য করেন যে, ঢাকা শহরে ছাগলের মাংসের সরবরাহ খুবই কম এবং দামও চড়া। অনেকেই অর্ডার না দিলে বা সপ্তাহে দু'একটি ছাড়া ছাগলের মাংস নিয়মিত পাওয়া যায় না। এই ভাবনা থেকেই তিনি একটি দোকান চালু করার পরিকল্পনা করেন, যেখানে শুধুমাত্র ছাগল ও ভেড়ার মাংস পাওয়া যাবে।
ঢাকা শহরে গরুর মাংস সহজলভ্য হলেও, প্রকৃত ছাগলের মাংসের ঘাটতি রয়েছে।
আফজালের দোকানের একটি বিশেষ আকর্ষণ হলো, ক্রেতারা জীবন্ত ছাগল বা খাসি দেখে, পছন্দ করে, দরদাম করে, কসাইয়ের সামনে আল্লাহর নামে জবাই দিয়ে মাংস নিয়ে যেতে পারেন।
ভাল মাংসের নিশ্চয়তা তিনি মান্য করে চলেন।
আফজাল হোসেন জানান, তিনি এখন আর গাবতলী হাট থেকে ছাগল কেনেন না। বরং তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর থেকে ছাগলগুলো নিয়ে আসেন। সেখানে তার ভাই গৃহস্থদের পালিত ছাগল ক্রয় করে ট্রাকে করে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এতে মাংসের গুণগত মান ও সতেজতা বজায় থাকে বলে তিনি মনে করেন।
আফজাল হোসেনের দোকানে মাংসের দামের ক্ষেত্রে দুটি ভাগ রয়েছে:
জীবন্ত ছাগল পছন্দ করে জবাই করে দিলে ৬৫০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। এক্ষেত্রে ছাগলের মাথা, চামড়া, ভূঁড়ি সবই নিতে হবে। অপরদিকে, শুধু মাংস ক্রয় করলে দাম দিতে হবে কেজিতে ১,২০০ টাকা।
আফজাল হোসেনের ক্রেতাদের মধ্যে অনেক ওরেস্তোরাঁ, ফাস্টফুড, ও দামি হোটেলের মালিকও রয়েছেন। তাঁরা দূর-দূরান্ত থেকে শুধুমাত্র মাংসের মান ভাল হবার জন্য তাঁর কাছ থেকে সব সময় মাংস নিয়ে যান। এছাড়াও বিয়ে, আকিকা ও জন্মদিনের মতো অনুষ্ঠানের জন্য বাবুর্চিরা তাঁর কাছ থেকে ভালো মানের ছাগলের মাংস সংগ্রহ করেন।
আফজাল হোসেন বিশ্বাস করেন, তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের পেছনে রয়েছে সততা। তিনি জানান "আমি কোনো ধরনের অসৎ উপায়ের আশ্রয় নেই না, তাই আমার ভোক্তারা আমাকে বিশ্বাস করেন। তাঁর এই ব্যবসায় দৈনিক অন্তত ৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয় বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও মনে করেন, ব্যবসায় সফলতা পেতে হলে ধৈর্যশীল হতে হয়।
ইস্টার্ন হাউজিং এর এম-ব্লকের মেইন রোড, আলুব্দি গ্রামের গরুর হাটের মেইন রোডের সামনে তাঁর দোকান।
আফজাল হোসেনের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ শুধু তাকেই ব্যবসায়িক সাফল্য এনে দেয়নি, বরং ঢাকা শহরের মাংসের বাজারে বিশুদ্ধ ছাগলের মাংসের একটি নির্ভরযোগ্য উৎসের সন্ধান দিয়ে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে।